জাহাঙ্গীর বাদশার রিপোর্ট : মসজিদ কমিটিকে ১০ ডেসিমেল জমি দান করে সমাজে সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যের বার্তা ছড়িয়ে দিলেন এক হিন্দু।বিনামূল্যে হলো রেজিস্ট্রেশন।হিন্দু ভাইয়ের প্রশংসায় পঞ্চমুখ মসজিদ কমিটির সদস্যরা।পূর্ব মেদিনীপুর জেলার তমলুক থানার অন্তর্গত বাপুর গ্রামে গড়ে উঠলো সম্প্রীতির অনন্য নজির।
যখন একশ্রেণীর রাজনৈতিক নেতারা হিন্দু মুসলিমের মধ্যে বিভেদ তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছে, যখন সাম্প্রদায়িকতাকে ইস্যু করে বিভাজন ভাগাভাগির রাজনীতি চলছে বাংলা জুড়ে তখন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন তমলুক থানার অন্তর্গত খারুই এর বাসিন্দা পেশায় শ্রমিক সমরেশ দাস।তাঁর বহুদিনের ইচ্ছেপূরণ হলো ।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলার তমলুক থানার অন্তর্গত মহম্মদীয় বাপুর গ্রাম জুম্মা মসজিদ কমিটিকে দান করলেন সমরেশ বাবুর ১০ ডেসিমাল জমি। বাপুর মৌজার ওই জমির দাম ৮ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা। যা আনন্দের সঙ্গে মসজিদ কমিটির বর্তমান সভাপতি সফিবুল খাঁ এর হাতে এদিন তুলে দিলেন সমরেশ দাস। পরে সাংবাদিকদের ক্যামেরার মুখোমুখি হয়ে বললেন, এই জমি আমি খুশি হয়ে আনন্দের সঙ্গে দান করেছি। যাদেরকে দান করেছি তাদের সাথে সেই ছোটবেলার সম্পর্ক।
সমরেশবাবুর এই কর্মকাণ্ডে খুশি মসজিদ কমিটি ও। মসজিদ কমিটি এই জায়গাটার জন্য খুব উপকৃত হবে, আমরা ধন্যবাদ জানাচ্ছি সমরেশ দাসকে। ক্যামেরার সামনে জানালো মসজিদ কমিটির কর্তৃপক্ষ। এই গোটা ঘটনার সাক্ষী থাকতে পেরে খুশি আইনজীবী ও। যার মাধ্যমে ওই জমির রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হয়েছে। তাই তিনি বিনা পয়সায় এই আইনি কাগজপত্র তৈরি করেছেন, সম্পূর্ণ টাকা পয়সা ছাড়া করেছেন রেজিস্ট্রি। এদিন আইনজীবী নাসরুল সামাদ বলেন আমি সমরেশ দাস কে অন্তর থেকে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। এমন মানুষ পাওয়া আজকাল দুষ্কর।
সত্যিই তো, এই জমি কিন্তু সমরেশ দাস শুধু মসজিদ কমিটিকেই দান করেছে তেমনটা নয়। তিনি মন্দিরের জন্যেও জায়গা দান করেছেন। আসলে সমরেশ দাস প্রমাণ করে দিয়েছেন ধর্ম নয়, সবার উপরে মানুষ সত্য। আর এদিন পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুকের মাটিতে যা ঘটলো তা হিন্দু মুসলিম সম্প্রদায়ের ভ্রাতৃত্ব ও মেলবন্ধনের ছবিটাকে আরও বেশি প্রকট করলো। রাজনীতির কারবারিদের একাংশ কি সাধে বলছেন, আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যে মেরুকরণের রাজনীতি যখন প্রকট হচ্ছে, সেই আবহে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অভূতপূর্ব ছবি উঠে এল পূর্ব মেদিনীপুর থেকে, যা অনন্তকালের জন্য মনে দাগ কেটে গেল।
0 মন্তব্যসমূহ