মনিপুরকাণ্ডের মধ্যেই পশ্চিমবঙ্গের মালদায় মধ্যযুগীয় বর্বরতা !
Report - Tamal Sau
পশ্চিমবঙ্গের মালদায় চোর অপবাদে দুই আদিবাসী মহিলাকে প্রকাশ্যে হাটের মধ্যে বিবস্ত্র করে মারধর ও জুতোপেটা করার অভিযোগে তোলপাড় রাজ্য। মালদার বামনগোলা থানায় পাকুয়াহাটের ঘটনা। মনিপুরের দুই মহিলার সাথে পাশবিক আচরণের পর ইতিমধ্যেই পুনরায় পশ্চিমবঙ্গে মধ্যযুগীয় বর্বরতার সাক্ষী থাকলো রাজ্যবাসী। সূত্রের খবর, গত মঙ্গলবার হাটে পকেটমার সন্দেহে ওই দুই মহিলাকে আটক করা হয়, তারপরেই চোর অভিযোগ তুলে তাদের উপর চড়াও হয় উন্মত্ত জনতা। নির্যাতিতা পরিবারের দাবি হার্টে লেবু বিক্রি করতে গিয়েছিলেন দুই জা। সেই সময় চোর সন্দেহে প্রকাশ্যে হাটের মধ্যেই সাধারণ মানুষ তাদের বিবস্ত্র করে মারধর জুতোপেটা করে। নির্যাতিতার পরিবার জানিয়েছে, ওই দুই নির্যাতিতা মহিলাকে পুলিশ ইতিমধ্যে গ্রেফতারও করেছে।
মালদার ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করে ইতিমধ্যেই পুলিশ পাঁচ জনকে আটক করেছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজ্যজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে কেন্দ্রীয় বিজেপির নেতা ও মন্ত্রীরা। অন্যদিকে গোটা ঘটনাকে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র বলে মনে করছে তৃণমূল। এ নিয়ে সংবাদমাধ্যমে মুখ খুলেছেন রাজ্যের নারীকল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা। তাঁর বক্তব্য, "মালদায় একটি বিশাল হাট রয়েছে। বিক্রিবাটা, কেনাকাটার জন্য বহু মানুষ আসেন। এই দুই প্রান্তিক মহিলাও এসেছিলেন। সেখানে চুুরির ঘটনা ঘটে থাকবে। তাতে মহিলাতে মহিলাতে ঝগড়া, ঝামেলা বাধে। এতে রাজনীতির কী আছে? ওখানে মহিলা সিভিক পুলিশ ছিলেন। তাঁরা ঝামেলা মেটানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু ভিড় তাঁদের পরোয়া করেনি। পরে ওই দুই মহিলা চলে যান। স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এই ঘটনায় মামলা দায়ের হয়েছে। মানুষ নিজে হাতে আইনশৃঙ্খলা তুলে নিয়েছেন, যা কোনও অবস্থাতেই কাম্য নয়। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। " তৃণমূলের তরফে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, রাজনীতির সঙ্গে কোনও যোগই নেই এই ঘটনার। রাজ্যের নির্বাচিত সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।"
মালদার ঘটনা নিয়ে শনিবার সংবাদমাধ্যমে মুখ খোলেন সিপিএম নেত্রী তথা পলিটব্যুরোর সদস্য বৃন্দা কারাট । তিনি বলেন, "দেশের যে কোনও প্রান্তে মহিলাদের উপর নির্যাতনের ঘটান নিন্দনীয়। আমরা সকলেই এই ধরনের ঘটনার নিন্দা করি। বাংলায় আদিবাসী হাটের মধ্যে এই ঘটনা ঘটেছে, যেখানে আদিবাসী মহিলারাই আদিবাসী মহিলাদের মারছেন। চেষ্টা করছেন কাপড় কেড়ে নেওয়ার। বিজেপি-র সাংসদ রয়েছেন ওই এলাকায়। বিষয়টি নিয়ে হস্তক্ষেপ করা উচিত। বাংলায় আইনশৃঙ্খলা নেই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের উচিত বিষয়টি দেখার। "
মনিপুরের ঘটনা এবং মালদার এই পাশবিক ঘটনায় একে অপরকে বিদ্ধ করছে তৃণমূল-বিজেপি। অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ থেকে শুরু করে, রাজনৈতিক বাকযুদ্ধ লেগেই রয়েছে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে।
0 মন্তব্যসমূহ